আরশোলা অর্থাৎ বহু জায়গায় এই পতঙ্গ তেলাপোকা নামেও পরিচিত। হ্যাঁ যেই পতঙ্গকে রান্নাঘরে অথবা বাড়ির মধ্যে দেখলেই তাড়াতে উঠে পড়ে লাগেন সেই আরশোলা অথবা তেলাপোকা এখন বাজারে বিকোচ্ছে ডলারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে এই তেলাপোকার বেশ চাহিদা রয়েছে। এই তেলাপোকা অথবা আরশোলা একাধারে যেমন বিভিন্ন রোগের ভাইরাস ছড়াতে পারে তেমনি এই পতঙ্গের উপকারিতা শুনলে আপনি অবাক হবেন।
প্রোটিন সমৃদ্ধ মুখরাচক খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার ঔষধি সামগ্রী ও পোশাকশিল্পে এই তেলাপোকা অথবা আরশোলা বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। বিশ্ব ব্যাংকের মতামত অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন গরিব দেশ গুলিতে এই পতঙ্গের চাষ করলে দারিদ্রতা ও ক্ষুধার সংকট অনেকটাই কমে আসবে। যদিও এই সমস্ত দেশগুলির আওতায় আফ্রিকা মহাদেশের বেশিরভাগ দেশ-ই অন্যতম।

যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে চিনের মতো দেশ অর্থ সংকটে না ভুগলেও তারা বহু সময় ধরেই খামারবাড়ি বানিয়ে আরশোলা অথবা তেলাপোকার চাষ করে আসছে। চীনে আরশোলা সুস্বাদু খাবার হিসাবে সমাদর পেয়ে থাকে তাই চীনের মত দেশে খাবার হিসাবে তেলাপোকার চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। এমনকি চীনে অবস্থিত কিছু প্রসিদ্ধ রেস্তোরাঁয় স্পেশাল রেসিপি হিসাবে প্রোটিন সমৃদ্ধ এই তেলাপোকা অথবা আরশোলা জুড়ি মেলা ভার।
এখনো পর্যন্ত বিশ্বের বৃহত্তম তেলাপোকা উৎপাদনকারী দেশ হল চিন। চীনের জি চ্যাং এ অবস্থিত কারখানা-ই হল বিশ্বের বৃহত্তম তেলাপোকা উৎপাদক কারখানা। চীনে যেমন সুস্বাদু রেসিপিতে তেলাপোকা ব্যবহার করা হয় তেমনি বর্জ্য পদার্থ খাওয়ানোর কাজেও ব্যবহার করা হয় এই পতঙ্গকে।২০১৮ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুডডক্টরের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আওতায় নিয়ন্ত্রিত খামারে বছরে ৬ হাজার কোটি তেলাপোকা অর্থাৎ আরশোলা উৎপাদিত হয়ে থাকে।

বর্তমানে গোটা বিশ্বের ২১০০ প্রজাতির পতঙ্গকে ভক্ষণ যোগ্যতার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই যেহেতু বহু প্রাচীনকাল থেকেই আফ্রিকার বহু মানুষ পতঙ্গ খেয়ে আসছে সেক্ষেত্রে গোটা আফ্রিকা জুড়ে এই ধরনের পতঙ্গের চাষ বাড়ছে ধীরে ধীরে। এই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তাঞ্জানিয়া।
এই পতঙ্গ নিদারুণ পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ার কারণে গোটা আফ্রিকার প্রায় কুড়ি শতাংশের বেশি মানুষ এর থেকে দারুন উপকৃত হতে পারবেন। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী গোটা আফ্রিকার ১৪ শতাংশ মানুষের প্রোটিনের চাহিদা এই পতঙ্গ চাষের মাধ্যমেই মেটানো সম্ভব।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষ ও প্রাণীর খাবার হিসাবে পতঙ্গের বিশ্ব বাজারে আকার দাঁড়াবে ৮০০ কোটি ডলারে। ইতিমধ্যেই উগান্ডার নব্বই শতাংশেরও বেশি মাছ চাষি মাছের খাবার হিসাবে পতঙ্গের ব্যাপক ব্যবহার শুরু করেছে এদের মধ্যে আরশোলা অন্যতম। এই প্রকার নিত্যনতুন খবরের সাথে আপডেটের থাকতে জুড়ে থাকবেন – ajkersonardam.com এর সাথে।