গত বছর নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) সমস্ত বাংলাদেশি প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছিলেন দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে যেন বৈধ পদ্ধতিতে ব্যাংক মারফতকেই বেছে নেয় তারা। হুন্ডির মতো অবৈধ বন থাকে সম্পূর্ণরূপে বর্জন করার ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ভাবেই নানা পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমস্ত প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহিত করে চলেছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আশা করা যায় এর ফল পাওয়া গেছে হাতেনাতে।
মাস শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহেই বৈধ পদ্ধতিতে দেশে রেমিটেন্স ঢুকেছে প্রায় শত কোটি ডলার। বর্তমানে অর্থাৎ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জুলাই মাস শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহেই ব্যাংক মারফত দেশে রেমিটেন্স এসেছে ৯৯ কটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এই বিপুল পরিমাণ অর্থের দৈনিক গড় হিসাবে ৭ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার বৈধ পদ্ধতিতে ব্যাংক মারফত দেশে ঢুকেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে তথ্য পর্যালোচনা স্বরূপ পাওয়া গেছে যে, চলতি জুলাইয়ের প্রথম ১৪ দিনে যে পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে ঢুকেছে এরমধ্যে বেসরকারি ব্যাংক গুলির মাধ্যমে এসেছে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৬০ হাজার ডলার, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলির মাধ্যমে এসেছে ১২ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংক মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এছাড়াও আরো অন্যান্য বিদেশী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
দেশে বসবাসকারী নিজ পরিবার ও প্রিয়জনদের ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফ থেকে সমস্ত বাংলাদেশী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে তারা যেন তাদের অতি কষ্টে উপার্জিত অর্থ রেমিটেন্স রূপে নিজ দেশে পাঠানোর সময় ব্যাংকিং চ্যানেল মারফত বৈধ পদ্ধতিতে রেমিটেন্স পাঠিয়ে থাকে। অন্যথা হুন্ডির মতো অবৈধ পন্থা বেছে নিলে প্রথমত, প্রবাসী দ্বারা প্রেরিত রেমিটেন্স সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে এবং দ্বিতীয়ত, আমাদের বাংলাদেশ সরকার বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার বৈধ পদ্ধতিতে রেমিটেন্স প্রেরনের ক্ষেত্রে প্রবাসী আয়ের উপর ডলারের দাম বৃদ্ধি, বৈধ উপায়ে ওয়েজ অনার্স রেমিটেন্স এর বিপরীতে ২.৫% হরে নগদ প্রণোদনা, রেমিটেন্স প্রেরণকারীদের সি আই পি সম্মান প্রদান, প্রভৃতি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে বৈধ পদ্ধতিতে রেমিটেন্স আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে এবং সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দিয়েছে।