বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশীয় বাজারে সমস্ত ক্যারেট সোনার দাম একেবারে লাফিয়ে কমেছে। সোনার উপর বিনিয়োগের প্রবণতাও চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। আবারো আগের মতই ভিড় জমতে শুরু করেছে শোরুম ও দোকানগুলিতে। তবে দাম কমেছে বলেই কি হলুদ ধাতুতে বিনিয়োগ ঠিক হবে, নাকি বিনিয়োগের জন্য সেই মূল্যবান চকচকে হীরা কেই পছন্দের তালিকায় রাখা উচিত। সবটা স্পষ্ট জানবো বিশেষজ্ঞদের মতে।
আমাদের প্রত্যেকের মাথায় রাখা উচিত, সোনা ও হিরে এই দুই মূল্যবান সামগ্রী-ই কিন্তু বৈচিত্রপূর্ণ বিনিয়োগ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী আগামী কয়েক মাসেও সোনার দাম আরো পড়বে। অবশ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে সোনা না কি হিরা কোন ধাতুতে বিনিয়োগ করা ভবিষ্যতের জন্য বেশি নিরাপদ যোগ্য হয়ে উঠবে তা জানাটা আপনার অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা এই দুই ধাতুতে বিনিয়োগের আগে কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন যেই পয়েন্ট গুলির নিরিখে আমাদের এই দুই মূল্যবান ধাতুর মধ্যে যেকোনো একটিকে বিনিয়োগের জন্য বেছে নিতে হবে। এই সমস্ত পয়েন্টগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যেমন লিকুইডিটি, বাজারের অস্থিরতা, মান ধরে রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ প্রকৃতি।
লিকুইডিটি

লিকুইডিটি অর্থাৎ তরল প্রক্রিয়াকরণ। সোনার গহনা অতি সহজেই তরলীকরণ করা সম্ভব কিন্তু হীরার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ততটা কার্যকরী নয়। তাই সাধারণ মানুষের চোখে অবশ্যই সোনা হল একাধারে যেমন কঠিন তেমনি তরল সম্পদও বটে। সোনার বাজারের বিস্তৃতি গোটা বিশ্বব্যাপী। তাই আপনি আপনার প্রয়োজন মত সোনার গহনা বা সোনার বাট জাতীয় জিনিস ভাঙিয়ে অন্য কোন নতুন রূপ প্রদান করতে পারেন। আবার সোনা ভাঙ্গিয়ে টাকা পাওয়া সম্ভব। তাই সোনার গহনা কেনা যতটা সহজ বিক্রির দিক থেকেও এই হলুদ ধাতু ততটাই কার্যকরী। একই প্রকার হীরের গহনা বিক্রি করতে হলে আপনাকে এমন কাউকে খুঁজে বের করতে হবে যিনি হীরার নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যকে গুরুত্ব দেবেন।
নির্দিষ্ট মান ধরে রাখা

সোনার দাম সর্বদা নির্ভর করে মুদ্রাস্ফীতি, চাহিদা, যোগান এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উপর। আর তাই ইতিহাসের বহু প্রাচীন কাল থেকেই সম্পদের ভান্ডার হিসেবে সোনা তার নিজস্ব বাজার মূল্য ধরে রেখেছে আজ পর্যন্ত এবং এই প্রক্রিয়া যে ভবিষ্যতেও কার্যকরী তাতে কোন সন্দেহ নেই। অন্যত্র হিরের মূল্য নির্ভর করে সর্বদা এই পদার্থের মধ্যে বর্তমান রং ওজন স্বচ্ছতা এবং ক্যারেট ইত্যাদির ওপর। আপনাদের জেনে রাখা ভালো যে হিরের পুনঃবিক্রয় মূল্য প্রায়শই খুচরো মূল্যের তুলনায় কম হয়ে থাকে।
বাজারমূল্যের অস্থিরতা

সোনার দাম যেমন বাজার পরিস্থিতি সহ আরো অন্যান্য কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে উঠানামা করে কিন্তু হীরের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিছুটা আলাদা। হিরের বাজার মূল্য সোনার তুলনায় অনেক বেশি ওঠানামা করে। হিরে একটি বিলাসবহুল পণ্য হওয়ার দরুন বাজার পরিবর্তনের সাপেক্ষ ও ফ্যাশন প্রবণতার উপর নির্ভর করে হীরের দামের ওঠানামা।
রক্ষণাবেক্ষণ
হিরের গহনার তুলনায় সোনার গহনার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে।
এই সমস্ত কারণগুলি মাথায় রেখে অন্তিম পর্বে অবশ্যই বিনিয়োগ সাপেক্ষ হিসাবে সোনা কেই অগ্রাধিকার দেওয়া যুক্তিযুক্ত। তবে আপনি সোনা অথবা হিরে এই দুয়ের মধ্যে যে কোন কিছুতেই বিনিয়োগ করে থাকুন না কেন সর্বদা বিনিয়োগের আগে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি রত্ন পাথর বিশেষজ্ঞদের-ও পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই প্রকার বিনিয়োগ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পোষ্টের আপডেট সর্বদা পেতে জুড়ে থাকবেন- ajkersonardam.com এর সাথে।